লালমাটির দেশে পোড়ামাটির গন্ধ নিয়ে ঘুরে আসুন বনফুল এর মায়াবী পরিবেশে

23rd October 2020 12:25 pm বাঁকুড়া
লালমাটির দেশে পোড়ামাটির গন্ধ নিয়ে ঘুরে আসুন বনফুল এর মায়াবী পরিবেশে


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) :   বাঁকুড়ার পর্যটন মানচিত্র বিষ্ণুপুর ,  জয়রামবাটি ,  শুশুনিয়ার পরেই স্থান পেয়েছে অরণ্য ঘেরা জয়পুর। ফি বছর বাঁকুড়ায় পর্যটকেরা বিভিন্ন পর্যটন স্থান ঘুরতে এসে ভিড় জমান জয়পুরের বনানীর মাঝে দু'একদিন কাটানোর জন্য। এখানে যেমন ভাবে রয়েছে ঘন বনাঞ্চল তেমনি ভাবে বন্য প্রাণীর দেখা মেলে কখনো কখনো। আর উপরি পাওনা হিসেবে মিলতে পারে বৃহদাকার বন্য হাতির দেখাও। সে কারনে বনদপ্তর এর পক্ষ থেকে করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এর পাশাপাশি জয়পুরকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের পার্ক ও জলাশয়। তেমনই একটি পার্ক ছিল সুরধ্বনি উদ্যান। সেই উদ্যান বেশ কয়েকদিন ধরেই অব্যবহারের ফলে একপ্রকার বন্ধ হতে বসেছিল। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে বিধায়ক তহবিল এর টাকা ব্যয়ে এই উদ্যানের কিছু অংশে একটি রিসট্ রেস্টুরেন্ট করার উদ্যোগ নেয় ব্লক প্রশাসন । তার নামকরণ করা হয় বনফুল । প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরা এই বনফুল এর ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ , রয়েছে সুইমিংপুল । এছাড়াও রাত্রিযাপনের জন্য রয়েছে কাঠের , বাঁঁশের ও সিমেন্টের তৈরি ছোট ছোট ট্র্রি হাউস । এছাড়াও রয়েছে তাঁবু খাটানো ট্রেন্ড ব্যবস্থা । এই মনমুগ্ধকর পরিবেশ  সমস্ত ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা যারা মাতৃভূমি জয়রামবাটি মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর ভ্রমণ করতে আসতেন তাদের হাতছানি দিতে থাকে মাঝে অবস্থিত জয়পুরের বনফুল রিসোর্ট ।  এই রিসোর্টে  এসে পর্যটনেরা একটি বারের জন্য বনফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন না এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না । সেই বনফুল রিসোর্টে জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতি ও বিধায়ক ফান্ডের থেকে দশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তৈরি করা হয় একটি বাঁশের তৈরি কটেজ ও একটি সিমেন্টের তৈরি কটেজ ।  এই দুটি বিশেষ কটেজের উদ্বোধন করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা । এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জয়পুর ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ আরো অনেকে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন জয়পুর পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিলেও, পর্যটকদের জন্য রাতে বসবাসের উপযুক্ত জায়গার অভাব ছিল। অগত্যা তাদের বিষ্ণুপুরে কিংবা ফিরে যেতে হতো জয়রামবাটিতে। সে কারণেই জয়পুরের পর্যটকদের রাত্রিবাসের জন্যই এই বিশেষ কটেজ এর গুরুত্ব অপরিসীম। জয়পুরে ঘোরাঘুরি করার পর পর্যটকদের কাছে সুযোগ মিলবে বনফুল রেস্টুরেন্টের দুটি অত্যাধুনিক কটেজে রাত্রি যাপনের। সেই সঙ্গে মিলবে ইট কাঠ পাথরের ভিড়ের থেকে অনেক দূরে বনের নিঃস্তব্ধতার মধ্যে রাত কাটানোর এক অপার শান্তির। পরদিন সকালে উঠে পর্যটকরা বেরিয়ে পড়তে পারবেন মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা সহ বিভিন্ন মন্দির বা জয়রামবাটি মাতৃমন্দির কিংবা রামকৃষ্ণের জন্মস্থান হুগলি জেলার কামারপুকুর এর উদ্দেশ্যে। বাঁকুড়ার পর্যটন মানচিত্রের এক নতুন সংযোজন বনফুল রেস্টুরেন্টের এই দুটি কটেজ সহ সমুদ্রবাঁধ । রাতের বেলায় নৈসর্গিক সৌন্দর্য লুটেপুটে নিতে পারবেন সকলে  বাতিস্তম্ভ হয়ে যাওয়ার ফলে।
 





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।